যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করেছিল ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় : পাকিস্তান

সংগৃহীত ছবি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :সাম্প্রতিক সংঘাতে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির সামরিক বাহিনীর মিডিয়া উইং আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী একথা জানিয়েছেন।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রসহ শক্তিধর বড় দেশগুলো পাকিস্তানের শান্তিপূর্ণ অবস্থানকে সম্মান জানিয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। সোমবার (১৯ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এআরওয়াই নিউজ।

 

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, সীমান্তে সংঘর্ষে “উপযুক্ত জবাব” পাওয়ার পর ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পাকিস্তানের কাছে যুদ্ধবিরতির অনুরোধ জানায় বলে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী দাবি করেছেন।

রোববার রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি অ্যারাবিক-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রধান এই সামরিক মুখপাত্র জানান, গত ৬ ও ৭ মে রাতে ভারত পাকিস্তানের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। জবাবে পাকিস্তান দ্রুত ও কঠোর প্রতিক্রিয়া জানায়। এই পাল্টা হামলায় পাকিস্তানের বিমানবাহিনী পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে।

 

তিনি বলেন, “সারাদেশ এবং সেনাবাহিনী একত্রে একটি অটুট প্রাচীরের মতো রুখে দাঁড়ায়। ৯ ও ১০ মে রাতে ভারত আবারও ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে আতঙ্ক তৈরি করতে চায়। কিন্তু তারা ভুলে গিয়েছিল, পাকিস্তানিরা ভয় পাওয়ার জাতি নয়।”

জেনারেল শরিফ আরও দাবি করেন, এরপর ১০ মে সকালে পাকিস্তান সতর্কতা ও সংযম বজায় রেখে প্রতিক্রিয়া জানায়—শুধুমাত্র ভারতীয় সামরিক স্থাপনায় আঘাত করে, কোনও বেসামরিক স্থাপনায় নয়। তার ভাষায়, “এটি ছিল সুষম, ন্যায্য ও নিয়ন্ত্রিত জবাব।

 

সংকটকালে আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানের কূটনৈতিক তৎপরতার প্রশংসা করে তিনি বলেন, “আমরা সহিংস নই, দায়িত্বশীল। শান্তিই আমাদের অগ্রাধিকার”। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বড় শক্তিধর দেশগুলো পাকিস্তানের শান্তিপূর্ণ অবস্থানকে সম্মান জানিয়েছে।

ভারতের বিরুদ্ধে আবারও সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলে পাকিস্তানের আইএসপিআর প্রধান বলেন, “নয়াদিল্লি বারবার মিথ্যা প্রচার চালিয়ে সত্য আড়াল করার চেষ্টা করে থাকে।

 

কাশ্মিরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সাম্প্রতিক হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হামলার কিছুক্ষণের মধ্যেই ভারতের গণমাধ্যম পাকিস্তানকে দোষারোপ করে, অথচ দুই দিন পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তদন্ত এখনও চলমান।

 

পাকিস্তানি এই সেনা মুখপাত্র প্রশ্ন তোলেন— “যখন তদন্তই শেষ হয়নি, তখনই দোষারোপ কতটা যুক্তিসঙ্গত?”

 

তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান ভারতের কাছে একটি যৌক্তিক প্রস্তাব দেয়—যদি প্রমাণ থাকে, তাহলে তা নিরপেক্ষ সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত করা হোক। কিন্তু ভারত সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে একতরফাভাবে আগ্রাসন চালায়। ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় মসজিদসহ বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু করা হয় এবং এতে নারী, শিশু ও বয়স্কদের মৃত্যু হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» মন পারাবার পারানির নাও

» মূহূর্তে রাশিয়ার ৪০ বিমান ধ্বংস, যেভাবে জটিল এ অভিযান চালাল ইউক্রেন

» বাংলাদেশের পাট গবেষণায় আগ্রহ চীনের

» ৩০০ আসনে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করছে মামুনুল হকের দল খেলাফত মজলিস

» আ.লীগের রাজনীতিতে ফিরে আসার আর কোনো সুযোগ নেই: আমানউল্লাহ আমান

» ‘নির্বাচনের দাবিকে ভারতীয় এজেন্ডা হিসেবে প্রচার বিপজ্জনক’- জোনায়েদ সাকি

» দেশের মানুষ সংস্কার নয়, দ্রুত সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়: গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

» ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ে সেনাবাহিনীর স্পষ্ট অবস্থান এবং কার্যক্রম দেখতে চাই’ : সারজিস

» ফ্যাসিস্ট বিদায় করার পর বিএনপিকে মাইনাস করার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে:জয়নুল আবদিন

» অসুস্থ মানুষকে নিয়ে এভাবে নিউজ করতে পারে, প্রশ্ন ছাত্রদল সভাপতি রাকিবের

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করেছিল ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় : পাকিস্তান

সংগৃহীত ছবি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :সাম্প্রতিক সংঘাতে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির সামরিক বাহিনীর মিডিয়া উইং আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী একথা জানিয়েছেন।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রসহ শক্তিধর বড় দেশগুলো পাকিস্তানের শান্তিপূর্ণ অবস্থানকে সম্মান জানিয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। সোমবার (১৯ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এআরওয়াই নিউজ।

 

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, সীমান্তে সংঘর্ষে “উপযুক্ত জবাব” পাওয়ার পর ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পাকিস্তানের কাছে যুদ্ধবিরতির অনুরোধ জানায় বলে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী দাবি করেছেন।

রোববার রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি অ্যারাবিক-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রধান এই সামরিক মুখপাত্র জানান, গত ৬ ও ৭ মে রাতে ভারত পাকিস্তানের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। জবাবে পাকিস্তান দ্রুত ও কঠোর প্রতিক্রিয়া জানায়। এই পাল্টা হামলায় পাকিস্তানের বিমানবাহিনী পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে।

 

তিনি বলেন, “সারাদেশ এবং সেনাবাহিনী একত্রে একটি অটুট প্রাচীরের মতো রুখে দাঁড়ায়। ৯ ও ১০ মে রাতে ভারত আবারও ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে আতঙ্ক তৈরি করতে চায়। কিন্তু তারা ভুলে গিয়েছিল, পাকিস্তানিরা ভয় পাওয়ার জাতি নয়।”

জেনারেল শরিফ আরও দাবি করেন, এরপর ১০ মে সকালে পাকিস্তান সতর্কতা ও সংযম বজায় রেখে প্রতিক্রিয়া জানায়—শুধুমাত্র ভারতীয় সামরিক স্থাপনায় আঘাত করে, কোনও বেসামরিক স্থাপনায় নয়। তার ভাষায়, “এটি ছিল সুষম, ন্যায্য ও নিয়ন্ত্রিত জবাব।

 

সংকটকালে আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানের কূটনৈতিক তৎপরতার প্রশংসা করে তিনি বলেন, “আমরা সহিংস নই, দায়িত্বশীল। শান্তিই আমাদের অগ্রাধিকার”। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বড় শক্তিধর দেশগুলো পাকিস্তানের শান্তিপূর্ণ অবস্থানকে সম্মান জানিয়েছে।

ভারতের বিরুদ্ধে আবারও সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলে পাকিস্তানের আইএসপিআর প্রধান বলেন, “নয়াদিল্লি বারবার মিথ্যা প্রচার চালিয়ে সত্য আড়াল করার চেষ্টা করে থাকে।

 

কাশ্মিরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সাম্প্রতিক হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হামলার কিছুক্ষণের মধ্যেই ভারতের গণমাধ্যম পাকিস্তানকে দোষারোপ করে, অথচ দুই দিন পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তদন্ত এখনও চলমান।

 

পাকিস্তানি এই সেনা মুখপাত্র প্রশ্ন তোলেন— “যখন তদন্তই শেষ হয়নি, তখনই দোষারোপ কতটা যুক্তিসঙ্গত?”

 

তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান ভারতের কাছে একটি যৌক্তিক প্রস্তাব দেয়—যদি প্রমাণ থাকে, তাহলে তা নিরপেক্ষ সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত করা হোক। কিন্তু ভারত সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে একতরফাভাবে আগ্রাসন চালায়। ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় মসজিদসহ বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু করা হয় এবং এতে নারী, শিশু ও বয়স্কদের মৃত্যু হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com